এ কেমন স্বাধীনতা : সুমিত রায়


 

উনিশশো সাত চল্লিশের পনেরোই আগষ্ট ভারত স্বাধীন হলো,

প্রায় দুইশত বছর ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতমাতা মুক্তি পেলো।

ইংরেজ বণিক অতিথি সেজে এলো ব্যবসার ছলে,

দেশের শাসন ক্ষমতা কেড়ে নিলো ছলে বলে কৌশলে।

দেশকে স্বাধীন করতে গিয়ে গেল কত তাজা প্রাণ,

ভারত মাতার শৃঙ্খল মোচনে কতো প্রাণ হলো বলিদান।

বহু রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা এসে উড়ছে স্বাধীন পতাকা,

যাদের প্রাণের বিনিময়ে এলো স্বাধীনতা ভুলোনা তাদের কথা।

বিপ্লবীদের জীবন কেটেছে বনে জঙ্গলে লুকিয়ে,

ইংরেজদের ছোঁড়া বুলেটে কতো তাজা দেহ পড়েছে লুটিয়ে।

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে কতো বিপ্লবীর কারাদণ্ড হলো,

হাসি মুখে ফাঁসির মঞ্চে জীবনের জয়গান গেয়ে গেলো।

ইতিহাস থেকে মুছে গেছে আজ শত শহিদের নাম,

যারা দেশের জন্য প্রাণ দিয়ে করেছিল সংগ্রাম।

বিনয় বাদল দীনেশ, যতীন নেতাজী ক্ষুদিরাম,

সকল স্বাধীনতা সংগ্রামী বিপ্লবীকে জানাই শতকোটি প্রণাম।

স্বাধীনতা পেলাম তবু রইলাম পরাধীন,

দেশের ক্ষমতা যাদের হাতে তাদের এসেছে সুদিন।

স্বাধীন দেশ কে নিয়ে আজ চলছে ছেলেখেলা,

দেশ শাসনের নামে দেশের মানুষ কে করছে অবহেলা।

স্বাধীনদেশের স্বাধীন মানুষ ধনি গরীব দুই শ্রেণীতে বিভক্ত,

এখনো দুবেলা খাবার জোটাতে গরীব করছে দাসত্ব।

স্বাধীনতার আগে হিন্দু মুসলমান ছিলাম ভাই ভাই,

ধর্মের নামে দেশ ভাগের পর আজ আর ভাব নাই।

দেশ স্বাধীন করতে গিয়ে, বিপ্লবীদের ঘুম ছিলনা চোখে,

আজ দেশ সেবার নামে নিজের স্বার্থকেই বড়ো করে দেখে।

বিপ্লবীদের সেই সংগ্রামের দিন, মানুষ যাচ্ছে ভুলে,

ইতিহাস সাক্ষী কতো রক্ত ঝরেছে ভারত মাতার কোলে।

মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে অসাধুদের বাড় বাড়ন্ত কালো হাত,

স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর পরেও বিচার করছি মানুষের জাতপাত।

প্রতিবছর পনেরোই আগষ্ট ঘটা করে পালন করি স্বাধীনতা,

পাশের বাড়ির ছেলেটা না খেয়ে মরে, তখন দেখাইনা মানবিকতা।

Post a Comment

Previous Post Next Post