আমার প্রাণের রবি, এস এইবার
তোমার সময় যে ফুরাইয়েছে
আর নয় কোন মায়া
বিদায় বেলা আগত
অবশেষে যাবার সময় হইয়াছে।।
কে? কে? অন্ধকারে
এ আমি কারে দেখি!
বউঠান! তুমি সত্যি আসিয়াছো
নিতে মোরে একাকী
তোমার স্বর্গরথে চাপি।।
বাবা! সাধ কত যাবে স্বর্গরথে
বলি ঠাকুরপো ওটি হবে না,
পারি দিতে হবে পায়ে হাঁটা
শালবন আর রাঙা মেঠো পথে।।
বউঠান আমি কেমনে তা পারি
ভুলেছো বুঝি,
উঠি বসি ইহাই সম্ভব না
আবার হাঁটা এ যে ভাবতেও
নাহি পারি।
না.. না.. শুনবনা একটি কথাও
রবি,
যেতে হবে হাঁটা পথেই
দুচোখে সাজাবো আমাদের নতুন স্মৃতির ছবি।।
মনে পড়ে, চন্দননগরের বাগানবাড়ি
ভোরের পাখির গান আর তোমার কবিতা,
সাথে গঙ্গার ফুরফুরে হাওয়া
টুপটাপ ঝড়ে পড়া ফুলের সুভাষ
আহা! কি আনন্দেই না কাটাতাম দিনগুলি।।
বউঠান তা কি আর ভোলা যায়
সুখের সাগরে ভাসতাম মোরা
দিনরাত খালি চলত কবিতার আসর,
সেইদিনগুলি হঠাত কেমন থেমে গেল হায়!
কেন চলে গেলে অকালে
দিয়ে ফাঁকি,
দুঃখ সাগরে বুঝি ভাসতে
কেবল তুমিই একাকী!
যাবার সনে পড়লো না মনে
একটিবারও আমাদের মুখ!
এতটা নিষ্ঠুর তুমি হতে পারলে
ভুলে গেলে সকল সর্ব সুখ।।
রবি থামো, এখনও কি ঝগড়াই করবে
নাকি এবার হাঁটা দেবে
যাবার মন নেই! তবে আমি চলি
দাঁড়াও বউঠান, বাকি কথাটুকু
না হয় যেতে যেতেই বলি।।
রবির কলম থামল অবশেষে
আপামর বাঙালি ভাসল চিরশোকে,
রবি পারি দিল বাইশে
তার বউঠানের সাথে;
ওই শোনা যায় কান্নার ধ্বনি
রবি এখন না ফেরার দেশে।।
