আমি আজকের বাঙালি : রশ্মিতা দাস




বাংলা আমায় আঁচল দিল,

দিল কথন,ভাষা

আমার অক্ষি-শ্রবণ-কথায়

বিদেশী ঠাট ঠাসা।


বিদেশী সুরে আত্মভোলা,

ধার করা আবরণে

আভিজাত্যের দম্ভ ফোটাই

অন্ধ বিশ্লেষণে।


বিদেশী শব্দে সাজিয়ে কথন

কদর আসে সস্তায়,

বাহারি চাকচিক্যে সত্তা

গিঁট দিয়ে বাঁধি বস্তায়।


ইংলিশ বুলি আওড়াই,

হোক অন্তঃসারশূন্য,

সন্তান পিতা চিনবে "ড্যাডি" তে

শিক্ষা তাতেই ধন্য।


মাতৃভাষায় হেলা ছড়ালেই

আমি বড় কেউকেটা,

বাংলার বুকে দাপিয়ে বেড়ায়

বিদেশী শব্দকোঠা।


আমি নতশির,মানের আড়ালে

ধরেছি ভিক্ষাপাত্র,

নিজ সম্পদে হেনে উপেক্ষা

ধরি অপরের ছত্র।


কে আমি?কি আমি?কি বা পরিচয়?

কোথা হতে আগমন?

ছুটছে সবাই তাই কি আমিও

ছুটে চলেছি অকারণ?


আমার ঘরেতে আঁধারে যে কাঁদে

রবীন্দ্র-নজরুল 

শরৎচন্দ্র হাতড়ায় কথা,

বোবা ধ্বনিরা আকূল...


সংস্কৃতি-কৃষ্টি-ভাষায়

আমারই এ অবহেলা

বিদেশী নিজের মুষ্ঠিতে ধরে

চাবিতে বেঁধেছে তালা।


আরশীটা যদি বিপরীতে ধরি,

আসবে যে প্রতিবিম্ব,

খুলে যাবে যত চাপা আবরণ,

মিথ্যা হবে এ দম্ভ।


বিদেশীরা যদি ভুলত হেনরি

চাপা দিত শেকসপিয়র,

বাংলাকে জয়মাল্য পরিয়ে

রুধত আপন দ্বার


বিদেশী বাপ মা বলত দম্ভে,

ছেলে ইংলিশে কাঁচা।

বাংলা মিডিয়ামেই দিয়েছি

ধরিয়ে ধুতির কোঁচা।


থাক ঘরে শত অমূল্য ধন,

নিজ মান যদি খাটো

অপরের পদতলেই কুড়াব

খুদকুঁড়ো মুঠো মুঠো...

Post a Comment

Previous Post Next Post