মন্ত্রীপ্রবর !
মার্জনা চাই ।
থাক প'ড়ে আজ
সব কাজ ।
আকাশে - বাতাসে
আগমনী গান ,
ঘরে - ঘরে --
উৎসব - সাজ ।
আর ক'টা দিন!
আসবে আবার
সবার দুলালী --
আমার মেয়ে ।
দু - চোখ আমার
সব ফেলে শুধু
থাকে যে তাহার
পথটি চেয়ে ।
প্রতি শরতেই
আসে তো সে ,
তবু -- যেন কতদিন
দেখিনি তাকে ।
তৃষিত হৃদয়
বর্ষা ফুরালে --
' উমা - মা ! আয় মা !
উমারে ! '-- ডাকে ।
এখন তো তার
চার ছেলে - মেয়ে ,
তবু যেন শুনি ,
মধুর বোলে --
দূর থেকে ডাকে
দিবসে - নিশীথে --
' কোলে নাও বাবা !
নাও না কোলে ! '
এত বড় হলো ,
মন্ত্রীমশাই !
তবুও যখনই
বসবো খেতে ,--
অন্ন সাজিয়ে
কোল ঘেঁষে বসে
হাঁ করে
প্রথম গ্রাসটি পেতে ।
এই কন্যাই জননী ,
যখন শুতে যাই ।
বসে ---
শিয়র ঘেঁষে ;
বাপ - মা-র চুলে
বিলি কেটে দ্যায় ।
ঘুম কি তখন
না পারে এসে !
কোলে তুলে তার
মায়ের চরণ ,
লাগায় আলতা -
তুলির টান ।
খাওয়া হ'লে মা-র
কত না সোহাগে
মুখে দ্যায় তুলে --
সুপারি - পান ।
খুনসুটি কত
ভাইয়ের সঙ্গে !
মান - অভিমানে
দুজনই দড় ।
মা হেসে আকুল
ভাব - সাব দেখে ।
ডেকে বলে -- উমা !
হোসনি বড় !
জামাতার ঘরে
নাকি -- দশভুজা !
বাপ- মা-কে পেলে --
সোহাগী মেয়ে ।
ছেলে - মেয়েদের
দায় তার মা - র ই ।
নিজে একবারও
দ্যাখে না চেয়ে ।
তুমিও তো পিতা ,
মন্ত্রীমশাই !
অনুভব করো , --
কী ক'রে থাকি --
সারাটা বছর
তাকে ছাড়া !
লাগে শূন্য সকল ,
কেবলই ফাঁকি ।
এই রাজকাজ ,
রাজ্যশাসন --
বৃথা মনে হয় ।
রাজ্যসুখ --
ছেড়ে দিতে পারি
হেলায় , যদি গো
ফিরে পাই বুকে
তনয়া মুখ
-- সংবৎসর । পারো যদি --
করো উপায় ,
তাহলে করো উপায় ।
একমনে ডাকি
বাপ - খুড়া মিলে --
কোথায় উমা - মা !
জননী আয় !!