শ্রাবণের ধারা ভরসা, আনন্দে হৃদয় পাগল পাড়া,
ছিল শেষ সম্বল, পায়ের "মল জোড়া"
দিলো মহাজনের কাছে বাধা,
ধান কিনে, বীজ বুনে ,দু পয়সা হবে আয়!
স্বপ্ন দীপ্তি ঝলমল চোখের তারায়।
দিন যায়, বীজ ভেঙে বিচুলি বিছায়,
কাদা- জল মেখে, চোখে- মুখে,
জলে ভিজে, রৌদ্রে পুড়ে ছাই, দু মানুষে।
বাচ্চাদের ফেলে ঘরে ,ভগবান ভরসায়,
কাক ভোরে বের হয়, ফেরে চারিধার ছায় আঁধার।
কষ্ট ভুলে দু -মানুষে খাটে আকূল আশায় ,
খাটুনি, ক্লান্তি- ক্লেশে হয় না কভু রুদ্ধ।
গায়ে ওদের অদম্য জোর, ইচ্ছা ঘনঘোর,
"রুদ্ধদেব" হন রুষ্ট, দিকে দিকে জন মানব শূন্য ।
দু মানুষে ,কাঠফাঁটা রৌদ্রে, হেঁট হয়ে বীজপোঁতে দ্বিপ্রহর।
পেটে খিদের জ্বালা, পান্তা খেয়েছিল সেই ভোরের বেলা,
"রুদ্রদেব "হলেন তুষ্ট তখন অবেলা মেঘের ছায়া ।
তখনও কিছুটা জমি ,বাকি বীজপোঁতা ।
ঝিরিঝিরি বেয়ে এলো শ্রাবণের ধারা, গোধূলি বেলা।
হলো না শেষ, সিঁদুর ধুয়ে জল বেয়ে,মুখে নামে জলধারা।
সবেগে এলো প্লাবনের ছাঁট ,বিদ্যুতের প্রহরণ,
সোজা হয়ে দাঁড়ালো ওরা, বীজপোঁতা হলো সারা।
দিনে দিনে ভরে ক্ষেতখানি, সবুজ বিছায়ে,
আউশ ,আমন-এর স্বপ্নে ভরে ওঠে মন, দু- মানুষের।
"সাধ" দেয়, নানা ফল সাজিয়ে আমোদে- উল্লাসে ,
কদিন ছিল বাকি ,পাকা ধান নেবে কাটি।
হঠাৎ- ই ,দু -মানুষের আশায় পড়ে গেল ছাই!
কলকল রবে সবেগে এলো সর্বনাশা বাণ,
ভাসায়ে নিয়ে গেল, সাধের পাকা ধান।
ওরা চেয়ে রয়, অসহায়ের চোখে,
রোদে জলে তেতে পুড়ে ,সোনার ধান এলো না ঘরে।
দুর্গাপূজা হল ধুমধাম, মহাসমাগমে!
নতুন জামা উঠলো না, কোলের মেয়েটির গায়ে,
"মল" জোড়া গেল খোয়া, মহাজনের সুদের দায়ে।
Tags:
বাংলা কবিতা