একা সুচরিতা : সায়ন্তন গাঙ্গুলী



আজ তিনদিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। সুচরিতা BPO sector এ কর্মরতা। অফিস যেতে পারছে না। এবার হয়তো চাকরীটাই আর থাকবে না। জানলার ধারে বসে থাকতে থাকতে কয়েকদিন আগেকার ঘটনা মনে পড়ে যাচ্ছে। সহকর্মী সিদ্ধার্থকে ভালোবাসে সুচরিতা। সিদ্ধার্থও ভালোবাসে সুচরিতাকে, অন্তত সুচরিতা সেটাই জানতো। কিন্তু সেদিন। রবিবার। সিদ্ধার্থর সাথে দেখা করতে যাওয়ার কথা সুচরিতার। কিন্তু হঠাৎ সিদ্ধার্থর ফোন।

সুচরিতা: হ্যাঁ, বলো। এই তো আমি আসছি বাবা।

সিদ্ধার্থ: থাক। আজকে আর আসতে হবে না।

সুচরিতা: রাগ কোরো না। এক্ষুনি আসছি।

সিদ্ধার্থ: আমি রাগ করছি না। আমার পক্ষে আর তোমার সাথে থাকা সম্ভব নয়। আমি তোমাকে নয়, পামেলাকে ভালোবাসি। আমি ছাড়া ওর আর কেউ নেই। সুচরিতা: আর আমি? আমার কি হবে?

সিদ্ধার্থ: আমার যা বলার, আমি বলে দিয়েছি। ফোনটা রাখো এবার, পামেলা Call করছে। ওর সাথে দেখা করতে যাওয়ার আছে।




দুজনে একসাথে ঘুরতে বেরিয়েছে। প্রিন্সেপ ঘাটে গঙ্গার ধারে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা লাগে সিদ্ধার্থর।

সিদ্ধার্থ: আরে, পামেলা। কেমন আছিস?

পামেলা সিদ্ধার্থকে চিনতে পারে না।

সিদ্ধার্থ: আমাকে চিনতে পারছিস না? আমি সিদ্ধার্থ, তোর Sid?

পামেলা: Sid, কেমন আছিস? কতো দিন পরে দেখা। কি করছিস এখন?

সিদ্ধার্থ: আমি BPO sector এ আছি। ভালো আছি রে। তারপর, তোর খবর কি? তোর তো বিয়ে হয়ে গেছে, না?

পামেলা: হ্যাঁ। একটা বিয়ে হয়েছিলো। কিন্তু বউভাতের চারদিন পরে ওকে অফিসের কাজে UK যেতে হয়েছিলো। UK যাওয়ার পথে Plane Crash হয়ে... সব শেষ।

সিদ্ধার্থ: কাঁদিস না।

পামেলা: এখন সব সয়ে গেছে। এখন আর কষ্ট হয় না।




হঠাৎ একটা ফোন এলো। সুচরিতা চোখের জল মুছে ফোনটা ধরলো। ফোনের ওপাশ থেকে Boss জানালো, তোমার চাকরীটা আর থাকলো না। চাকরী হারিয়ে, ভালোবাসা হারিয়ে সুচরিতা আজ একা হয়ে গেলো। সম্পূর্ণ একা।

Post a Comment

Previous Post Next Post