শ্রদ্ধেয় সত্যজিৎ বাবু
আমার মনে অনেক দিনের জমানো
কিছু কথা তোমায় আজ বলছি,
জানিনা তুমি শুনতে পাবে কিনা।
তবুও বলছি তোমাকে!
১৯৫৫ সালে তুমি যখন "পথের পাঁচালী"
পড়তে শুরু করেছিলে, আমরা তোমাকে
হেলায় ঠেলে ফেলে দিয়েছিলাম।
তুমি কোন চিন্তা না করে
৫৬ সালেও ছিলে "অপরাজিত"।
৫৮ সালে "পরশ পাথর" হাতে নিয়ে
নিজের খেয়ালে তৈরি করলে "জলসাঘর"।
৫৯ সালে "অপুর সংসার" পেতে দিয়ে
৬০ সালে "দেবী"কে প্রতিষ্ঠা করতে করতেই
৬১ তে "তিন কন্যা"র সাথে
"রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে" সাথে নিয়ে অপেক্ষা না করেই
মনের আনন্দে ৬২ সালে "কাঞ্চনজঙ্ঘা"
অভিযানে বেড়িয়ে পড়লে।
একবছর যেতে না যেতেই ৬৩ সালে আবার
ফিরে আসলে তোমার পুরানো "মহানগর"এ।
সেখানে ও ৬৪ সালের "চারুলতা" কে নিয়ে
৬৫ সালে "কাপুরুষ মহাপুরুষ" বানিয়ে
৬৬ তে "নায়ক" হিসেবে উপস্থিত করলে।
সবাইকে নিয়ে ৬৭ সালে " চিড়িয়াখানা "
পরিদর্শন করতে করতে ৬৮ সালের
"গুপি গাইন বাঘা বাইন " কে নিয়ে
৬৯ এ বেড়িয়ে পরলে "অরন্যের দিনরাত্রী"র খোঁজে। ৭০ এ তোমার সামনে আসলো
"প্রতিদন্ধী"। ৭১ এ তুমি সেখানে "সীমাবদ্ধ"
না থেকে বেড়িয়ে পড়লে "সিকিম" এর উদ্দেশে।
সিকিম ঘুরতে ঘুরতে ৭৩ এ তোমার সামনে
এবার "অশনি সংকেত''। কি করবে ভেবে না পেয়ে ৭৪ এ ঢুকে পড়লে "সোনার কেল্লা"য়।
সেখানে ও তুমি বেশিদিন থাকতে পারলে না।
৭৫ এ "জন অরন্য" মাঝে কি সব খুঁজতে
গিয়ে না পেয়ে আবার ৭৬ সালে "বাংলা" য়
এসেও সুখে থাকতে পারলে না।
৭৭ এ পা দিয়েই "সতরঞ্জ কে খিলাড়ি" র
পাল্লায় পড়ে ৭৯ বছরের"জয় বাবা ফেলুনাথ"
কে নিয়ে রওনা দিতেই ৮০ তে গিয়ে
সাথে পেলে "পিকু" কে। এদের সবাইকে
পাওয়ার সাথে সাথেই হীরক রাজের আমন্ত্রণ
গ্রহণ করে চলে গেলে " হীরক রাজার দেশে"।
সেখানে কিন্তু ৮১ সালে তোমার একটা
"সদগতি" হলো। ৮৪ সাল পর্যন্ত "ঘরে বাইরে"
হতে হতে আবার ৮৭ সালে ডাক পাঠালো
"সুকুমার রায়"। তার সাথে আলোচনা শেষে
৯০ এ আবির্ভূত হয় "গণশত্রু"র।
৯২ সাল পর্যন্ত তারা "শাখা প্রশাখা" বিস্তার করে
তোমাকে আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিতেই
"আগন্তুক" এসে চুপিসারে তোমাকে
নিয়ে গেল তোমার জীবনের শেষ ঠিকানায়।
আমরা আর খুঁজে পেলাম না তোমাকে।
তোমার জন্য মন ভারাক্রান্ত।
তবুও আমার পাশে নয় আমার কাছেই থেকে গেছো।