ভাঙ্গা কেদারা : কল্পনা মিত্র


                                                               

বাবার চেয়ারটাতে বসে কেমন একটা আরাম বোধ করল মৃণাল । কিসের যেন একটা পরিতৃপ্তিতে মনটা ভরে উঠলো। কিসের যে তৃপ্তি সেটা কাউকে বুঝিয়ে  বলা যায় না  তবু আজ  যুক্তি সহযোগে বুঝতে ইচ্ছে করছে আর কাউকে বলতে  ইচ্ছে করছে। সংযুক্তা এর মধ্যে দুবার ব্যালকনিতে উঁকি মেরে দেখে গেছে মৃণালকে , কি জানি কেন ! যাকগে, সংযুক্তা কি মনে করল তাতে বয়ে গেছে , আজ  সে  নিজে তৃপ্তি  পেয়েছে সেটাই বড় কথা। আসল কথা মানুষ যে কখন কিসে তৃপ্তি পায় তা নিজেই জানেনা  কিম্বা বোঝেনা। দাদু কে বৃদ্ধ বয়সে নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে তাঁর বড় ছেলের সাথে কলকাতা যেতে হয়েছিল যদিও এতে তাঁর সায় ছিলনা কিন্তু বাবার কেন এই ব্যাপারটায় সায় ছিল আর কেনই বা তৃপ্তি পেয়েছিলেন সেটা  কি তিনি নিজেকে যুক্তি  দিয়ে বোঝাতে বা   কাউকে বুঝিয়ে বলতে পেরেছিলেন !   ... বাবাকে খাওয়ানোর মতন পয়সার অভাব যে  তাঁর ছিল না  একথা মা অকপটে স্বীকার করেছিলেন। বাবা যেমন আসল কথাটা কাউকে বলতে পারেন নি তেমনি দাদুও বলতে পারেন নি  যে এই বয়সে তিনি তাঁর পৈতৃক  বাড়ি ছেড়ে যেতে চান না...।সে সময়ে পুরুষ শাসিত সমাজে  মা বাবাকে এই ব্যাপারে বাধা দিয়ে কোন  কথা বলতে পারেন নি  ।আজ সমাজে ও জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত মৃণাল তার এই সুখটাকে মনের তৃপ্তি নাকি  প্রতিশোধ বলে চিনহিত করবে নিজেই   বুঝতে পারছে না ।  সংযুক্তাকে বলা তো দূরের কথা।


সে যখন ছোট্টটি তার বয়স কতো ছিল বলতে পারবে না  শুধু মনে করতে পারে দাদু  একটা আরামকেদারায় বসে  থাকতেন সারাদিন ,পারলে দুপুরের ভাত খাওয়া ঘুমটাও এখানেই ঘুমাতেন। ছোট্ট মৃণাল যখন তখন এসে ঝাপিয়ে বসে পরত  তাঁর কোলে, দাদু তার পেটে কাতুকুতু দিয়ে  বলতেন “ঘুম হল আমার দাদুভাইয়ের ?দেখি পেটের  ভাতটা হজম হয়েছে কিনা !” সে উল্টে দাদুকে কাতুকুতি দিয়ে বলতো দেখি দাদুর ঘুম  ভাঙ্গল কিনা...দাদু জড়িয়ে ধরে  বলতেন, “ একটা  স্বপ্ন দেখছিলাম দাদুভাই তুমি ঘুমটা ভাঙ্গিয়ে দিতেই স্বপ্নটা পালাই পালাই করে চলে  গেল ।” অমনি দাদুর বুকের মধ্যে লুটোপুটি খেয়ে, গলা জড়িয়ে সেই স্বপ্ন শোনার বায়না করতো সে ।  এইভাবে   রোজ একটা করে স্বপ্ন শুনত দাদুর কাছে। মৃণালের বেশ মনে আছে দাদু এই বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার দিন বার বার এই আরামকেদারার দিকে ফিরে ফিরে দেখছিলেন তাঁর চোখের কোলে পিচুটির মতন জমে উঠেছিল জল।  দাদা কোথাও খেলছিল  কখন যে এসে দাদুর একটা হাত ধরতেই ছোট্ট মৃণাল ছুটে গিয়ে দাদুর অপর হাতটাকে জড়িয়ে ধরেছিল।বাবা এগিয়ে এসে ওকে আর দাদাকে সরিয়ে এনে মায়ের কাছে ঠেলে দিতেই মৃণাল লাফিয়ে মায়ের কোলে উঠে  পরেছিল। মা তার মাথাটাকে ঘাড়ের ওপর চেপে ধরেছিলেন । দাদু চলে যাওয়ার পর বাবা চেঁচাচ্ছিলেন “ কেন ওনার বড়ছেলের কি কোন দায়িত্ব নেই  ?  বাবার দেখাশোনা করার সব  দায়িত্ব শুধুই কি এই ছোট ছেলের কেননা আমি পৈতৃক ভিটেতে বাস করি তাই ? ”     এ সময় মায়ের পক্ষে বাবাকে কোন উত্তর  দেওয়া বা তাঁর সামনে থেকে সড়ে  যাওয়া সম্ভব  ছিল না  কারণ বাবার রাগ এতে আরও বেড়ে যাবে  , মাকে  তাই বাধ্য হয়ে বাবার সহমতের সঙ্গী  হয়ে থাকতে হতো এটা এতদিনে  মৃণাল বুঝতে পারে । সেদিন মা শুধু বার বার   দাদা আর ছোট্ট মৃণালের চোখের দিকে চেয়ে  অস্থির হচ্ছিলেন । দাদুহীন  ওই ইজিচেয়ারটা বা আরামকেদারাটা বহুদিন ওই উঠোনটাতে একইভাবে  পরেছিল… খুব কষ্ট হত মনে ...সে বুঝেছিল এই  চেয়ারটা না থাকলে দাদুর বসা  ,ঘুম  কোনটাই   আর হবে না  !এই দোল দোল দুলুনি চেয়ারটাতে দাদুর   সারা দিনের  অর্ধেকটা  কাটতো ।   যাওয়ার সময় আরামকেদারার   দিকে দাদুর  ব্যাকুল নয়নে তাকিয়ে থাকার  ভাষাটা আজও মৃণাল মনে রেখেছে ।মা কখনো সখনো ওই আরামকেদারাতে তাকে বসালে ওর মনে হত  যেন কোন  গর্তের  মধ্যে  ডুবে  যাচ্ছে সে।  পরিত্যক্ত কেদারাটা ধীরে ধীরে  শালিক,চড়াই , মুরগিদের, চড়ে বেড়ানোর আর দোল  খাওয়ার জায়গা  আর বেড়াল ,কুকুরছানাদের লাফালাফি  করার  কিম্বা  আরামের ঘুম ঘুমানোর নিশচিন্তের আশ্রয় হয়ে উঠেছিল অথচ এতদিন ওরা দাদুর পায়ের কাছে ঘুর ঘুর করত কিম্বা নিশ্চিন্তে  ঘুমাতো আর পাখি গুলো দাদুর কাছে মুড়ির দানা  খুঁটে খুঁটে খেত।কদিন অবশ্য কুকুর বেড়াল গুলোও বুঝিবা ওই কেদারায় দাদুকে খুঁজত তাই কেদারাটাকে সমীহ করতো  কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছোট্ট পাখিদের কেদারার ওপর স্বাধীন বিচরণকে লঘু করতে  তারা কেদারাটাকেই  আরামের শয্যা করে নিয়েছিল । ছোট্ট মৃণালকে  তার দাদা দাবায় বসে বসে এ সব বোঝাত ।  বাবা মাঝে মাঝে এদের জ্বালায় বিরক্ত হয়ে  পায়ের ঠেলায় কেদারাটাকে  সরিয়ে  দিতেন, এইভাবে একটু একটু  করে উঠোনের এক কোণে সেটার ঠাই  হয়েছিল। 


এর পর অনেক বছর কেটে গেল, পড়াশোনা,খেলাধূলো ইত্যাদিতে ব্যাস্ত থাকার ফলে দাদুর      অনুপস্থিতি আর মনকে ছুঁয়ে যেত না। বাড়িটার টালির ছাদ সড়ে কবে যেন পাকা ছাদের আচ্ছাদনে মুড়ে গেল ।সময়ের সাথে সাথে তারা দুই ভাই সেই ছোট্টটি থেকে আজ যুবকে পরিণত  হয়েছে ।  দাদার বিয়ের সময় বাগান , উঠোন ,ঘর বাড়ি ইত্যাদি পরিস্কার করা হচ্ছিল  । কাঠ-কূটো যা কিছু  জ্বালানির  জন্য এক জয়গায়  জড় করা হচ্ছিল । বাবা ,মায়ের সাথে মৃণালও এই সব কাজের দেখাশোনা করছিল। একসময় মজুরদের একজন গাছপালার ঝোপ থেকে টেনে বেড় করলো উই পোকা ধরা , রোদে জলে কঙ্কালশীর্ণ আরামকেদারাটা ! বাবা বললেন “কি ওটা ? ওঃ ! ওটাকে জ্বালানির জন্যে রেখে দে ।”  মা অস্ফুটস্বরে   বললেন “ না । ”  মজুর বলল “ বাবু , এটাতে কিচ্ছু নেই , জলে  আর পোকায় ঝুরঝুরে করে দিয়েছে ।” বাবাকে কেউ ডাকছিল ,বাবা যেতে যেতে মায়ের দিকে ফিরে বললেন “ যাই হোক জ্বালানির কাজে একটু তো লেগে যাবে।” বাবা চলে যেতে মা মৃণালের হাতটা চেপে ধরে বল্লেন “ বাবা, ওটাকে চিনতে পারছিস !তোর দাদুর কেদারা ! আজ এই অবস্থা...অথচ ওটা ছাড়া দাদুর একদণ্ড চলত না..তোরাও যে এর ওপর বসে থাকা দাদুর ওপর কতো লাফাঝাপা  করেছিস। শুনেছি ওনার বাবার কেদারা ছিল এটা, এটাকে ছেড়ে যেতে ওনার খুব কষ্ট হচ্ছিল।  তোমার বাবার মুখের ওপর কথা  বলার অনুমতি আমার কোনদিনও নেই অথচ সেদিন ছোট্ট ছোট্ট দুভাই তোমাদের সামনে দাদুর অপমানও  সহ্য হচ্ছিল না। বাবার যে দাদুকে খাওয়ানোর ক্ষমতা ছিলনা তা নয় তবু….. এই বাড়ি ফেরা তাঁর আর হয়নি !..একটা কাজ  করবি বাবা, এটাকে লুকিয়ে রাখ আর  সুযোগ  মতন গঙ্গায় ভাসিয়ে দিস তবে কথা দিতে হবে বাবাকে কোনোদিনও অপমান করবি না।” মায়ের চোখ দুটো জলে ভরে গিয়েছিল।বিয়ের বাজার করার অজুহাতে বড়  থলিতে বন্দি করে মৃণাল সেটার বিসর্জন দিয়ে এসেছিল।


দাদার বিয়ের বছর দুই বাদে মা টকটকে লাল আলতা পায়ে ,কপালে জ্বলজ্বলে সিন্দুরের টিপ , সিঁথি ভর্তি সিন্দুর নিয়ে বেনারসি সাড়ি জড়িয়ে  দিগবিজয়িনির মতন  শশ্মান  যাত্রা করেছিলেন । তারা দুই ভাই লোকাল ট্রেনে চেপে  নিত্য কলকাতায় চাকরি করতে আসত। একবছর কাটতে দাদা গাড়ি কিনেছিল । বাবার রিটায়ার্ডের পর দাদা বাবাকে  স্পঞ্জের  গদি  আঁটা ,পিঠে  স্পঞ্জ এর কুশন  দেওয়া আরাম করে বসার একটা চেয়ার কিনে দিয়েছিল। সেটাতে আরাম করে বাবা রোজ বসতেন আর  প্রায়শই ছেলেদের কাছে নিজের ছেলেবেলা ,ঠাকুরদাদা ,বাবা , মা ,দাদা, সকলকে নিয়ে অনেক স্মৃতিচারণ করতেন। কথা প্রসঙ্গে  বাপ  ঠাকুরদাদার আমলের  সেই আরামকেদারার কথা মাঝে সাঝেই উঠে আসতো ।মৃণালের মনে প্রশ্ন জাগতো তার বাবা কি বেশি  স্বাচ্ছন্দে বসার জন্যে আরামকেদারার  অভাব বোধ করছেন  নাকি নিজের বাবার সঙ্গে করা আচরনের জন্যে আজ তিনি অনুতপ্ত !


 বাবার  মৃত্যুর পর তারা দুই ভাই কলকাতায়  আলাদা আলাদা  ফ্ল্যাট  কিনেছে  । দুজনেই  প্রতিষ্ঠিত। মৃণালও গাড়ি কিনেছে এবং এক আই টি সেকটারে   কর্মরতা যুবতী সংযুক্তাকে বিয়ে করেছে।ছেলেবেলায় পিতৃহীন  সংযুক্তার মা ছিলেন  কলেজের প্রফেসর। গতবছর হার্ট  অ্যাঁটাকে তিনি মারা যান। পৈতৃক বাড়ি বিক্রির ব্যাবস্থা পাকা হতে মৃণাল বাবার চেয়ারটা  গাড়িতে চাপিয়ে গতকাল কলকাতায় নিয়ে এসেছে । দিনকয়েক পর সংযুক্তাও  একটা চেয়ার নিয়ে এসে  বাবার চেয়ারের  পাশে রাখতে রাখতে বলল “ তুমি তোমার বাবার চেয়ারটা এনেছ দেখে আমিও আর লোভ  সামলাতে পারলাম না বাপের বাড়ি থেকে এটাকে নিয়ে এলাম । মায়ের মুখে শুনেছি এটা আমার দাদুর  শেষ বয়সের আশ্রয় ছিল  তাই মাকেও প্রায় দিনই এটাতে বসতে দেখেছি । ” মৃণাল দেখল বাবার শেষ আশ্রয়ের র্তুলনায়ে  এটা বেশ পুরাতন। সংযুক্তা আর মৃণাল পরম তৃপ্তিতে যে যার নিজের স্মৃতিবিজড়িত চেয়ারদুটিতে পিঠ এলিয়ে বসল । আজ যেন সংযুক্তাকে  কথায় পেয়েছে  বলল, “দেখ আমাদের বাড়িতে কতো দামি দামি সোফা আছে তবু যাই  বল বাবা মায়ের স্মৃতিগুলো  সেগুলোর চাইতেও মূল্যবান !  তুমি এটা এনেছো  দেখে আমিও নিয়ে এলাম। মায়ের কাছে শুনেছি  আমার  ঠাকুরদাদার একটা উঁচু কাঠের  চেয়ার ছিল তাতে   গদি এঁটে আর পিঠের দিকে কুশন দিয়ে দাদু  তাতে বসে নাকি খুব আরাম পেতে ন। তিনি মারা  যেতে কলকাতা শহরের বুকের ওই  বাড়ীটাতে ঘরের কমতি  পরেছিল তাই  ঠাম্মার  ঠাই হয়েছিল সিঁড়ির তলার ছোট্ট  ঘড়টাতে ,সেখানে  একজনের একটা খাট ছাড়া কিছু আঁটত না  । আসন আর কুশন খুলে  রেখে  চেয়ারটা ছাদে তুলে দেওয়া হয়েছিল , ঠাম্মি  তাতে বড়ি ,বালিশ এই সব  রোদে দিতেন  কখনো বা  চেয়ারটাতে বসে রোদ পোয়াতেন।ঠাম্মি মারা যাওয়ার পর ...মা একবার শীতের কাপড় রোদে দিতে গিয়ে চেয়ারটা দেখতে না পেয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন  বাড়ি সাড়াইয়ের সময় ওটা কোন এক  মিস্তিরিকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।  বাড়ির বড় বউ  হওয়ার কারণে দাদু -ঠাম্মির  সাথে মা জীবনের  অনেকটা সময় কাটিয়ে ছিলেন তাই ব্যাপারটা মা কে  খুব কষ্ট দিয়েছিল সেকারণে মা  নিজের বাবার এই চেয়ারটার অমর্যাদা  করেন নি। ” সংযুক্তা এই ভাবে তার মায়ের না বলা কথাগুলো প্রকাশ করল । মৃণাল ঘরে গিয়ে একটা লম্বা  গোছের  মোটা মলাটের খাতা নিয়ে ফিরে এসে বসল  , বোল্লো  “ সংযুক্তা এটা আমার দাদুর খাতা, কাল আবরজনার মধ্যে খুজে পেলাম , দেখ পাতা  গুলো মচমচ করছে ... এটাকে   পাণ্ডুলিপিও বলা  যায়,জানো  দাদু রোজ আমাকে একটা  করে স্বপ্ন শোনাতেন তার মধ্যে কিছু স্বপ্ন  এইটাতে   লেখা আছে । ভাবছি কারেক্সান করে  ‘ ঠাকুরদাদার ঝুলি ’ নামে একটা বই ছাপতে দেব।” সংযুক্তা মৃণালের হাতের খোলা খাতাটার প্রথম  পৃষ্ঠায় লেখা  লাইন কটা উচ্চস্বরে পড়ল।



আম খেতে টক হয় , হয় খেতে মিষ্টি 

জীবনেতে দুখ  আছে ,আছে সুখ বৃষ্টি

নুন,ঝাল,মিঠে মিলে রান্নার তরিবৎ

খাপ যদি না খাওয়ায় দিতে হবে খেসারত।



মায়ের নির্দেশ মতন মৃণাল বাবাকে অসন্মান করেনি  বরং বাবার শেষ আশ্রয়টাকে নিজের কাছে  এনেছে  । বাবার তৃপ্তি মাখানো হাসি মুখটা ভেসে উঠল । বাবা  নিজের বাবাকে  শেষ আশ্রয় থেকে বঞ্চিত করেছিলেন তাই হয়তো   তাঁর  বাবার এই  রকম হাসি  মুখটা তিনি দেখতে পাননি অথচ তাঁর সেটা দেখা উচিত ছিল। দাদুর  পুঁথিটা  বুকে চেপে ধরল মৃণাল, দুচোখ বন্ধ  করে সে দাদু আর  মা -বাবার মুখের স্মিত হাসি কল্পনা করে  মৃদু হেসে বিড়বিড় করলশন্ন ‘ কেমন প্রতিশোধ  টা নিলাম বাবা …!” অপার বিস্ময় সংযুক্তা তার দিকে চেয়ে  বলল ‘  কি হল মৃণাল?”… মৃণাল বলল “এ কথা কাউকে বলা যাবে না ।”

Post a Comment

Previous Post Next Post